Latest News
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ।। ১৫ই চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
Home / জাতীয় / অবশেষে সুস্থ হয়ে সেই মা বাসায় ফিরলেন

অবশেষে সুস্থ হয়ে সেই মা বাসায় ফিরলেন

স্টাফ রিপোর্টার :
অক্সিজেন সেচুরেশন ৭০ অবস্থায় মা-কে বাঁচানোর জন্য শরীরে ৮ লিটার মাত্রার চলমান ২০ কেজি ওজনের অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে যে বাইকে করে হাসপাতালে নিয়ে করোনার চিকিৎসা দিয়েছিল সন্তান, সেই মমতাময়ী মায়ের অক্সিজেন সেচুরেশন ৯৬ নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন সেই বাইকে করেই। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ৬ দিন চিকিৎসা শেষে শুক্রবার সকাল ১১টায় তাকে ঝালকাঠির নলছিটির সূর্যপাশা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। মা রেহেনা পারভীন (৫৮) সুস্থ অবস্থায় বাসায় ফিরেছেন বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সন্তান জিয়াউল হাসান টিটু। হাসপাতাল থেকে বের হয়ে মায়ের সঙ্গে ছবি তুলে দুই ছেলে তা ফেসবুকে পোস্ট করে। মায়ের সুস্থতায় ছেলেরা বিজয় সূচক চিহ্ন দেখিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। হাসপাতালের চিকিৎসক, গণমাধ্যম ও বিভিন্ন দপ্তর থেকে তাদের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রেহেনা পারভীনের ছেলেরা।
রোগীর অক্সিজেন সাপ্লাই ঠিক রাখতে শরীরের সঙ্গে গামছা দিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে রেখেছিলেন। মোটরসাইকেলের পেছনে করোনায় আক্রান্ত মা বসে আছেন। সেই স্কুল শিক্ষিকা মা রেহেনা পারভীনকে লকডাউনের সময় মোটরসাইকেলে করে গত শনিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর ছেলে। আর এ দৃশ্য দেখতে পেয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মহাসড়কে থাকা চেকপোস্ট থেকে সেই করোনা রোগী বহন করা মোটরসাইকেলটিকে দ্রæত ও অবাধে যেতে দিয়েছে পুলিশ। ওই সময় পুলিশের এক সদস্য একটি ছবি তুলে তা ফেসবুকে পোস্ট করে। এর পরেই ছবিটি ভাইরাল হয়ে যায়। সেই মা রেহেনা পারভীন (৫০) সুস্থ অবস্থায় বাসায় ফিরেছেন।
বাসায় ফিরে তিনি নামাজ আদায় করেছেন। তাকে দেখতে আসেন আত্মীয় স্বজনরা। তাদের সঙ্গে কথাও বলছেন এই শিক্ষক। তাঁর শরীরে করোনার কোন উপসর্গ নেই, এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক রেহেনা পারভীন।
রেহেনা পারভীন ঝালকাঠির নলছিটি বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবদুল হাকিম মোল্লার স্ত্রী। রেহেনাকে বহনকারী মোটরসাইকেলের চালক হচ্ছেন তারই মেঝো ছেলে জিয়াউল হাসান টিটু। টিটু শুক্রবার সকালে মা’কে সুস্থ অবস্থায় নলছিটির বাসায় নিয়ে এসেছেন। তাঁর সঙ্গে অপর একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন বড় ছেলে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান মিঠু ও ছোট ছেলে রাকিবুল হাসান ইভান।
জিয়াউল হাসান টিটু বলেন, ‘মাকে নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। অবশেষে মা’কে সুস্থ অবস্থায় সঙ্গে নিয়ে ৬ দিন পর বাসায় ফিরলাম। এরচেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে। আমি কৃতজ্ঞ সৃষ্টিকর্তার নিকট, কৃতজ্ঞ যাঁরা সহযোগিতার জন্য পাশে ছিলেন।’
শিক্ষক রেহেনা পারভীন বলেন, আমি কৃতজ্ঞ আমার সন্তানদের প্রতি। তাঁরা আমার শরীরের অবস্থা খারাপ দেখে ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালে গেছে। আমি সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে পুরো ঘটনা শুনেছি। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের পোস্ট দেখেছি। আমি তাদের সকলের প্রতি চির কৃতজ্ঞ। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমার ছেলেদের জন্যও দোয়া চাইছি। আজ আমি সম্পূর্ণ সুস্থ, আমি বেঁচে ফিরে এসেছি, এটাই আনন্দ। আল্লার রহমত ছিলো, চিকিৎসকদের সেবা এবং দেশের মানুষের দোয়াই আমাকে দ্রæত সুস্থ করে দিয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা খুবই আন্তরিকভাবে আমার সেবা দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, আমার শরীরে এখন করোনার কোন উপসর্গ নেই। শনিবার নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করাবো।
জিয়াউল হাসান টিটু জানান, গত ৯ এপ্রিল তাঁর মার করোনা শনাক্ত হলে নলছিটির সূর্যপাশা বাড়িতে বসেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শনিবার দুপুরে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফোন দিলে অ্যাম্বুলেন্স অন্য রোগী নিয়ে বরিশাল চলে গেছে বলে জানানো হয়। লকডাউনের মধ্যে কোন গাড়ি যখন পাচ্ছিলেন না, তখন সংকটাপন্ন মায়ের জীবন বাঁচাতে মোটরসাইকেলে টিটু নিজের শরীরে অক্সিজেন সিলিন্ডার বেঁধে অক্সিজেন মাস্ক পরিয়ে হাসপাতে নিয়ে আসেন।

জনতার কণ্ঠ 24 সংবাদ

ঝালকাঠি টেলিভিশন সাংবাদিক সমিতির ইফতার অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার : ঝালকাঠি টেলিভিশন সাংবাদিক সমিতির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় …