কে এম সবুজ :
দুরন্তপনার মধ্যেই যার সময় কাটতো, ঝালকাঠির সেই আসিফ ইকবাল চঞ্চল এখন দুঃসময়ের বন্ধু। নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও পরিবারকে সময় না দিয়ে মানুষের কল্যাণে শ্রম দিচ্ছেন তিনি। করোনাকালে কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবতার উচ্চশিখরে নাম উঠেছে তাঁর। কখনো দুস্থ, অসহায়, গরিব কখনো আবার মধ্যবিত্তর বাড়িতে পৌছে দিচ্ছেন খাদ্যসামগ্রী। সাধারণ একটি প্যাকেট নয়, যে খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে অনেকগুলো পণ্য। একটি পরিবারের একমাসের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার দেওয়া হচ্ছে। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তাঁর কয়েকজন বন্ধু ও পরিচিতজনরা। নিরবে নিভৃতে প্রচারের অগোচরে তিনি মাঠে নেমেছেন করোনা দুর্যোগের শুরুতেই। মাইনেট নামে একটি ক্যাবল নেটওয়ার্কের ব্যবসার মাধ্যমে এতোদিন পরিচিত ছিলেন তিনি। এখন তাঁর সব পরিচয় হারিয়ে মানবতার ফেরিওয়ালা উপাধি পেয়েছেন স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে।
জানা যায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবেলায় সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে। গত ২৬ মার্চ থেকে জরুরিসেবার প্রতিষ্ঠান ছাড়া সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়। তখনই মানুষের মধ্যে করোনার বিষয়টি আলোচনায় আসে। একের পর এক এলাকা লকডাউন করা হয়। যানবাহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। করোনা আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়, মানুষের মনও আক্রান্ত হচ্ছে বেদনায়।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত সংবাদ শুনেই মাঠে নেমে পড়েন ঝালকাঠির কর্মউদ্যোমি যুবক আসিফ ইকবাল চঞ্চল। নিজের জমানো টাকা দিয়ে শুরু করেন কর্মহীন মানুষের জন্য খাদ্যসামগ্রী তৈরি। জনপ্রতি ২৩টি পণ্য তিনি বিতরণ শুরু করেন। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দিচ্ছেন খাদ্য সহায়তা। এর মধ্যে রয়েছে ২০ কেজি করে চাল, পাঁচকেজি আলু, এককেজি ডাল, দুইকেজি পেঁয়াজ, দুইকেজি আটা, এককেজি চিনি, এককেজি সরিষার তেল, রসুন, মুড়ি চাপাতা, তিন ধরণের সাবান ও কাচাবাজার। তাকে দেখে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বৃত্তবান অনেকেই। অনেকে আবার সম্পৃক্ত হয়েছেন তার খাদ্যসহায়তা প্রদানে। এর মধ্যে রয়েছেন তাঁর নিটক আত্মীয়, বন্ধু, প্রতিবেশী ও পরিচিতজনরা। যার যেটুকো সামর্থ ছিলো, সবটুকোই আসিফ ইকবালের কাছে তুলে দিয়ে মানবতার সেবায় নিয়োজিত হয়েছেন।
আসিফ ইকবাল চঞ্চল বলেন, আমি যখন ভাবলাম কর্মহীন মানুষ না খেয়ে থাকবে, মনটা খারাপ হয়ে গেলো। যাদের উপার্জনে আমাদের চাকা ঘোরে, তারাই আজ মানুষের কাছে হাত পাতবে। কিছুতেই মানতে পারিছিলাম না। বিবেকের তাড়নায়, নিজের জমানো কিছু টাকা দিয়ে এসব মানুষকে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিলাম। এর পরে দেখি অনেকেই আমাকে এ কাজের জন্য সহায়তা করছেন। এ পর্যন্ত আমি ২৭০ জনকে সহায়তা করেছি। করোনা দুঃসময় যতদিন থাকবে, ঠিক ততোদিনই আমাদের এ সহায়তা চলবে।
জনতার কণ্ঠ 24 সংবাদ
নলছিটিতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হত্যা মামলায় নারী ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে
স্টাফ রিপোর্টার : ঝালকাঠির নলছিটিতে আলোচিত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জিয়াউল হাসান ফুয়াদ কাজী হত্যায় জড়িত …