Latest News
সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪ ।। ২৯শে আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Home / জাতীয় / অর্থনৈতিক চাঁকা সচল রাখতে চাতাল কন্যারা ভূমিকা রাখছেন

অর্থনৈতিক চাঁকা সচল রাখতে চাতাল কন্যারা ভূমিকা রাখছেন

কে এম সবুজ
ঝালকাঠি নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নে ছোট ছোট কয়েকটি চালকল রয়েছে। এসব চালকলে দিন রাত কাজ করছেন কয়েকজন নারী শ্রমিক। ধানকে চালে রূপান্তর পর্যন্ত এরা কাজ করে থাকে। স্থানীয় ভাবে এসব নারী শ্রমিকরা চাতাল কন্যা নামেই পরিচিত। মিল মালিকদের কাছে পুরুষ শ্রমিকদের চেয়ে কাজে ফাঁকি না দেওয়া নারী শ্রমিকদের কদরই বেশি। দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করলেও শ্রমের বিনিময়ে যা পায় তা তাদের জীবনধারনের জন্য অতি নগন্য। বর্তমানে দ্রব্যমুল্যের এ ঊর্ধ্বগতির বাজারে মাত্র ৬০/৮০ টাকায় তাদের সারাদিনের হাড় ভাঙ্গা শ্রম কিনে নিয়ে মালিকরা লাভবান হচ্ছেন। আর চাতাল কন্যাদের জীবনের প্রতিটি দিন কাটছে মানবেতর অবস্থায়। দপদপিয়া ফেরিঘাট থেকে মটরসাইকেলযোগে এক কিলোমিটার সামনে রাজাখালী গ্রামে গিয়ে দেখা মিলে চাতাল কন্যাদের। কথা হয় পিয়ারা বেগম, নারগিস বেগম, রানী বেগম, বেবি বেগম ও কমলা বেগমের সঙ্গে। হতদরিদ্র এ নারীরা জীবিকার তাগিদে এলাকার চালকলে কাজ নেয়। চাতালের প্রতিটি স্তরে তাঁরা দলবদ্ধভাবে কাজ করে। চাতালে ১০/১২ জন নারী শ্রমিকের বিপরিতে পুরুষ শ্রমিক থাকে ৩/৪ জন। প্রতিটি দলে থাকে একজন সর্দার। তাঁর অধীনে ধান শুকানো, ভাঙ্গানো এবং চাল করে বস্তায় ভরা হচ্ছে চাতালদের প্রধান কাজ। ধান আনা, ঝাড়া, সিদ্ধ করা ও ছাড়ানোর কাজ প্রধানত নারী শ্রমিকরাই করে থাকেন। অর্থনৈতিক দীনতা, রোগ-শোক আর অসাস্থ্যকর পরিবেশ সব মিলিয়ে তাদের জীবন এখন মানবেতর অবস্থার সম্মুখীন। সারা দিন কাজ করার জন্য তাঁরা তাদের সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখতে পারেনা। অপর দিকে স্বল্প আয়ের কারনে পারছে না ছেলে মেয়েদের সুষম খাদ্যের ব্যবস্থা করতে। এ জন্য তাদের ছেলে মেয়েরা অপুষ্টির শিকার হয়ে সাভাবিক ভাবে বেড়ে উঠতে পারছে না।
চাতাল কন্যাদের অনেকেই বিধবা তালাকপ্রাপ্ত ও স্বামী পরিত্যাক্তা। তাদের শ্রমে মিল মালিকরা লাভবান হলেও ওই নারীদের জীবনে কোন উন্নয়ন ঘটেনি। একদিন কাজে না এলে তাদের উনুনে হাড়ি চড়ে না। মৌসুম চলে গেলে মিল মালিকদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে আগাম শ্রম বিক্রি করতে হয় তাদের। একটি চালকলের মালিক বাদশা হাওলাদার বলেন, ‘চাতাল কন্যাদের শ্রমের কারণে দপদপিয়া থেকে প্রতিদিন কয়েক শত মণ চালের চালান সম্ভব হলেও তাঁরা এ সেক্টরে সব চেয়ে বেশি অবহেলিত’।