Latest News
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Home / জাতীয় / একটি হত্যা ঘটনায় তিনটি মামলা ঝালকাঠির চারপাঁচটি পরিবার হয়রানীর শিকার

একটি হত্যা ঘটনায় তিনটি মামলা ঝালকাঠির চারপাঁচটি পরিবার হয়রানীর শিকার

স্টাফ রিপোর্টার :
ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্ত্তিপাশা ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী নেছারাবাদ উপজেলার জৌসার গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য নুরুল ইসলাম (৬২) হত্যার ঘটনায় একে একে তিনটি মামলা দায়ের হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রথম মামলাটি নিহতের ছেলে মো. রিপন মোল্লা বাদী হয়ে করলেও সে বিষয়টি গোপন করে অপর দুটি মামলা করেন যথাক্রমে রিপনের চাচা মো. জবেদ মোল্লা ও অটোচালক মো. ফরিদ মোল্লা । তিনটি মামলায় ২২ জনকে আসামি করা হয়েছে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই গ্রামের নিরিহ মানুষ। প্রকৃত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও নিরিহ মানুষদের হয়রানী বন্ধের দাবি জানিয়ে বুধবার ঝালকাঠি প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহত নুরুল ইসলামের স্ত্রী খাদিজা বেগম। সংবাদ সম্মেলনে নিহতের ছেলে প্রথম হত্যা মামলার বাদী মো. রিপন মোল্লা, মেয়ে নুসরাত জাহান ও নিহতের ভাই তোফাজ্জেল মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে খাদিজা বেগম জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তাদের বাড়ির কাছে ঝালকাঠি নেছারাবাদ সড়কের জৌসার নামক স্থানে দুইদল ম্যাজিক গাড়ীর (থ্রি-হুইলার) মধ্যে বিরোধ থামাতে গিয়ে এক পক্ষের হামলায় খুন হন তার স্বামী মো. নুরুল ইসলাম মোল্লা (৬২)। হত্যাকান্ডের পরের দিন নিহতের ছেলে মো. রিপন মোল্লা বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় নেছারাবাদ থানার সাগরকান্দা গ্রামের ম্যাজিক চালক মো. নাহিদ, ঝালকাঠি সদর থানার মো. রনি, মো. রাজু ও মো. জুয়েলসহ অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলায় জুয়েল নামে যাকে আসামি করা হয়েছে, তিনি পেশায় অটোচালক এবং বাড়ি কীর্ত্তিপাশার বেশাইনখান গ্রামে। কিন্তু এ মামলায় নেছারাবাদ থানা পুলিশ গত ১৭ সেপ্টেম্বর বেশাইন গ্রামের আব্দুর রব মোল্লার ছেলে কনফেকশনারি দোকানের মালিক মো. সাইফুল ইসলাম জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করে।
মামলার বাদী রিপন মোল্লা বলেন, আমার বাবা যে স্থানে খুন হয়েছে, সেখানে লোকজনের কাছ থেকে শুনে আমি জুয়েল নামে একজন ম্যাজিক গাড়ির চালককে আসামি করেছি। তাকে আমি চেনেন না এবং বাবার নামও জানি না । কিন্তু পুলিশ কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বাদী হিসেবে আমার সঙ্গে কোনো কথা না বলেই সাইফুল ইসলাম জুয়েলকে গ্রেপ্তার করেছে। এ জুয়েল আমার বাবার খুনের সঙ্গে জড়িত নয়। রিপন মোল্লা আরও জানান, আমার বাবা হত্যার ঘটনাকে পুঁজি করে একটি মহল নানা ধরনের যড়যন্ত্র শুরু করেছে। আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে একটি মহল কিছু নিরিহ লোককে হয়রানী করা শুরু করেছে। আর এসব দূরবিসন্ধিতে আমার বাবার প্রকৃত হত্যাকারীরা পারপেয়ে যেতে পারে।
তিনি অভিযোগ করেন, আমার বাবার খুনের ঘটনার ১৫ দিন পর আমাদের কিছু না জানিয়ে, আমার মামলার বিষয়টি গোপন করে আমার চাচা জবেদ মোল্লা পিরোজপুর আদালতে একটি নালিশী হত্যা মামলা দায়ের করেন, যাতে নয়জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি আদালত বরিশাল পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। এ মামলায় ফরিদ মোল্লা নামে একজন অটোচালককেও আসামি করা হয়। আমার চাচা বাদী হয়ে নালিশী মামলা দায়েরের ১৫ দিন পর আবার তাঁর মামলার আসামি ফরিদ মোল্লা বাদী হয়ে আমার বাবা হত্যার ঘটনায় একই আদালতে আরো একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন। আদালত নালিশী মামলা গ্রহণ করে নেছারাবাদ থানাকে এফআইআর হিসেবে রেকর্ডের নির্দেশ দেন। নেছারাবদ থানা আদালতের নির্দেশে অভিযোগ গত ২৫ নভেম্বর জিআর ১৩২/২০ হিসেবে মামলা রেকর্ড করেন। এ মামলায় আমার চাচা জবেদ মোল্লা, তার দুই ছেলে, আমার চাচাত ভাই সহ নয়জনকে আসামি করা হয়। গ্রেপ্তার ভয়ে আমার চাচা এবং চাচাত ভাইরা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আমার বাবার কাছ থেকে ফরিদ মোল্লা দুইলাখ টাকা ধার নিয়েছিল, এ ঘটনার সাক্ষী আমার চাচা জবেদ মোল্লা। টাকা নেয়ার ঘটনা ধামাচাপা দিতে ফরিদ মোল্লা আমার চাচাকে আসামি করে মামলা করেছে। সাংবাদিক সম্মেলনে রিপন মোল্লা এবং তাঁর মা খাদিজা বেগম পিরোজপুর জেলা পুলিশ সুপার এবং প্রশাসনের কাছে মিথ্যা মামলা দায়েরকারী ফরিদ মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের দাবি জানান। পাশাপাশি অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা সাইদুর রহমান জুয়েলের মুক্তি এবং নিরিহ ১৫/১৬ জনকে হয়রানী না করার দাবি জানান ।
এ ব্যাপারে পিরোজপুরের নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবীর মোহাম্মদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য নুরুল ইসলাম মোল্লা হত্যার ঘটনায় তাঁর ছেলে বাদী হয়ে যে হত্যা মামলা দায়ের করেছে, তা গোপন রেখে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরপর দুটি নালিশী মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার একটি আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং আর একটি থানায় রেকর্ডের নির্দেশ দেন। তিনি আরও বলেন দ্বিতীয় মামলার আদেশ হাতে পেয়ে আমি বিজ্ঞ বিচারকের সাথে যোগাযোগ করে আগে একটি মামলা হয়েছে তা জানিয়েছিলাম, বিজ্ঞ বিচারক মামলা রেকর্ড করে দুটি মামলার তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছেন। এখন একজন এসআই দুটি মামলা তদন্ত করছেন। আশা করি প্রকৃত হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আমারা চার্জশিট দাখিল করতে পারবো ।

জনতার কণ্ঠ 24 সংবাদ

ঝালকাঠিতে শতাধিক মানুষকে ঈদ উপহার দিলো স্বপ্ন পূরণ সমিতি

স্টাফ রিপোর্টার : ঝালকাঠিতে শতাধিক মানুষকে ঈদ উপহার দিয়েছে স্বপ্ন পূরণ সমিতি। সোমবার বিকেলে শহরের …